এসআই নিয়োগ প্রস্তুতির পরামর্শ
প্রতিদিন দৌড়ান: পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর হতে গেলে শুধু বইয়ের পড়াশোনা দিয়েই চাকরি করা সম্ভব নয়। এখানে শারীরিক সক্ষমতাও জরুরি। পুরুষ প্রার্থীদের ১ হাজার ৬০০ মিটার দৌড় ৭ মিনিট ৩০ সেকেন্ডে এবং নারী প্রার্থীদের ১ হাজার মিটার দৌড় ৭ মিনিটে অতিক্রম করতে হবে। তাই প্রতিদিন ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে দৌড়ান।
জাম্পিং অনুশীলন: দুই ধরনের জাম্প করতে হবে। প্রথমত লং জাম্প ও হাই জাম্প। প্রতিদিন জাম্প করার অনুশীলন করতে হবে। এখন থেকে প্রতিদিন অনুশীলন করলে সাবলীলভাবেই আপনি জাম্প করতে পারবেন। লং জাম্পের ক্ষেত্রে পুরুষ প্রার্থীদের কমপক্ষে ১০ ফুট ও নারী প্রার্থীদের কমপক্ষে ৬ ফুট দূরত্ব জাম্প করে যেতে হবে। এই ধাপে উত্তীর্ণ হতে সর্বোচ্চ ৩ বার সুযোগ পাবেন। অন্যদিকে হাই জাম্পের ক্ষেত্রে, পুরুষ প্রার্থীদের কমপক্ষে ৩ দশমিক ৫ ফুট ও নারী প্রার্থীদের কমপক্ষে ২ দশমিক ৫ ফুট উচ্চতায় অতিক্রম করে জাম্প করে যেতে হবে। এই ধাপে উত্তীর্ণ হতে সর্বোচ্চ ৩ বার সুযোগ পাবেন।
প্রতিদিন পুশআপ দিন: পুশআপ প্রতিদিন দেওয়ার অনুশীলন করুন। একজন সাব-ইন্সপেক্টর হলেন পুলিশের মেরুদণ্ড, তাই তার শারীরিকভাবে সক্ষমতা থাকতে হয়। পুশআপ নিয়মিত দিলে শারীরিক সক্ষমতা বাড়ে। পুরুষ প্রাথীদের ৪০ সেকেন্ডে ১৫টি পুশআপ এবং নারী প্রার্থীদের ৩০ সেকেন্ডে ১০টি পুশআপ দিতে হবে।
সিটআপ দিন: আপনাকে শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে সব ইভেন্টেই উত্তীর্ণ হতে হবে। তাই দৌড়ানো, জাম্প করা, পুশআপ দেওয়ার পাশাপাশি সিটআপও দিতে হবে। এটা অবশ্যই প্রতিদিন অনুশীলন করবেন। পুরুষ প্রার্থীদের ৪০ সেকেন্ডে ১৫টি সিটআপ এবং নারী প্রার্থীদের ৩০ সেকেন্ডে ১০টি সিটআপ দিতে হবে।
ড্রাগিং শিখুন: নিয়মিত ড্রাগিং দেওয়া অনুশীলন করুন। এটা শুধু শক্তির পরীক্ষা নয়, কৌশলেরও বিষয়। তাই নিয়মিত এটা যদি প্র্যাকটিস না করেন, তাহলে হুট করে শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষার দিন ব্যর্থ হতে পারেন। পুরুষ প্রার্থীদের ১৬০ পাউন্ড ওজনের টায়ারকে টেনে ৩০ ফুট দূরত্ব এবং নারী প্রার্থীদের ১২০ পাউন্ড ওজনের টায়ারকে টেনে ২০ ফুট দূরত্ব পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে।
দড়ি বেয়ে উঠুন: ছোটবেলায় আমরা স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় দড়ি বেয়ে ওঠার প্রতিযোগিতা করেছি। তা ছাড়া কিশোরবেলা দড়ি বেয়ে খেলাও খেলেছি। এখন চাকরি পাওয়ার জন্যও সেটি দরকার হচ্ছে। ছোটবেলার ওই শিক্ষাটা বৃথা যাচ্ছে না। তাই ছোটবেলার শিক্ষাটা আরও ঝালিয়ে নিন। পুরুষ প্রার্থীদের কমপক্ষে ১২ ফুট এবং নারীদের কমপক্ষে ৮ ফুট রোপ ক্লাইমিং বা দড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলে এ-সংক্রান্ত ভিডিও আপলোড করা আছে। সেগুলো দেখেও শিখতে পারেন।
লিখিত ও মনস্তত্ত্ব পরীক্ষার মানবণ্টন: ইংরেজি এবং বাংলা রচনা ও কম্পোজিশনের ১০০ মার্কসের পরীক্ষা ৩ ঘণ্টায় দিতে হবে। সাধারণ জ্ঞান ও গণিতের ওপর ১০০ মার্কসের পরীক্ষার জন্য ৩ ঘণ্টা বরাদ্দ থাকে। তারপর ৫০ মার্কসের মনস্তত্ব পরীক্ষা ১ ঘণ্টা দিতে হবে।
বিগত সালের প্রশ্ন অনুশীলন: পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টরের নিয়োগ পরীক্ষায় কমন কয়েকটি টপিক থেকেই বেশি প্রশ্ন এসে থাকে। এটা আরও ভালো বোঝা যাবে, বিগত সালের প্রশ্ন নিয়মিত অনুশীলন করলে। বিগত সালের প্রশ্নের সমাধান আছে, এমন একটা ভালো বই থেকে এ অনুশীলন করলে ভালো একটা প্রস্তুতি হয়ে যাবে।
নিয়মিত পত্রিকা পড়ুন: চাকরির প্রস্তুতির জন্য পত্রিকা খুব ভালো একটা মাধ্যম। নিয়মিত পত্রিকা পড়লে ইংরেজি, বাংলা রচনা, কম্পোজিশন ও সাধারণ জ্ঞানের প্রস্তুতি অনেকাংশে হয়ে যাবে। তাই মনোযোগ দিয়ে নিয়মিত পত্রিকা পড়তে হবে। পত্রিকা থেকে গুরুত্বপূর্ণ ডেটা ও লেখা নোট করে রাখতে হবে। এসআই নিয়োগ প্রস্তুতির পরামর্শ
নিয়মিত গণিত অনুশীলন: বিগত সালের প্রশ্নগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কয়েকটি কমন টপিক থেকে গণিতের প্রশ্ন এসে থাকে। যেমন গসাগু ও লসাগু, ভগ্নাংশ, সরলীকরণ, ঐকিক, গড়, অনুপাত ও সমানুপাত, শতকরা ও লাভক্ষতি, সুদকষা, পরিমাপ, ক্ষেত্র ইত্যাদি। গণিতের প্রস্তুতির জন্য ষষ্ট, সপ্তম, অষ্টম ও নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্যবই অনুশীলন করলে প্রস্তুতি পাকাপোক্ত হবে।
কম্পিউটার টাইপিং শিখুন: শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষা ও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে কম্পিউটার দক্ষতা পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে। তাই নিয়মিত কম্পিউটারের টাইপিং শিখুন। বাংলা এবং ইংরেজি উভয় বিষয়ে দ্রুতগতিতে টাইপ করা শিখতে হবে। স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের অভ্যাস: সাব-ইন্সপেক্টরের লিখিত পরীক্ষায় বসতে হলে আপনাকে শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। তাই এখানে শারীরিক ফিটনেস অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খান, পর্যাপ্ত ঘুমান। তা ছাড়া ওজন বাড়ানো বা কমানোর প্রয়োজন হলে সেটির দিকে গুরুত্ব দিয়ে মনোযোগ দিতে হবে। আজ থেকেই স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের অভ্যাস করুন। হয়ে উঠুন বাংলাদেশ পুলিশের একজন গর্বিত ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর।