ক্যারিয়ারে পিছিয়ে যাওয়ার কারণ সমূহ
একজন শিক্ষার্থী ক্যারিয়ারে কত ভালো জায়গায় যাবেন, তা অনেকটা নির্ভর করে ছাত্রজীবনটা তিনি কীভাবে অতিবাহিত করেছেন, তার ওপর। ছাত্রজীবন হলো ভবিষ্যৎ জীবনের বীজ বপনের সময়। ছাত্রজীবনের করা কিছু ভুল ক্যারিয়ারে পিছিয়ে দেয়
পড়ালেখা না করা:
একজন শিক্ষার্থীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো পড়ালেখা করা। অনেক শিক্ষার্থী এই প্রধানতম কাজটা না করে অন্যান্য বিষয় নিয়ে মহাব্যস্ত হয়ে পড়েন। ফলে ছাত্রজীবন শেষে একরাশ হতাশা তাকে গ্রাস করে ফেলে। একজন শিক্ষার্থী পর্যাপ্ত পড়ালেখা না করার ফলে ফেল করতে থাকেন, আবার কোনো কোনো সময় টেনেটুনে পাস করে পরের ক্লাসে ওঠেন। এভাবে হয়তো একদিন পড়াশোনাও শেষ করে ফেলেন। শিক্ষিত তকমা লেগে যায়। কিন্তু ওই পড়ালেখা দিয়ে তিনি ক্যারিয়ারে তেমন ভালো করতে পারেন না। প্রতিযোগিতার এই যুগে চাকরি না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন।
মাদকাসক্ত হওয়া:
বর্তমানে স্কুলের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী ধূমপান ও মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছেন। ধূমপান থেকে অনেকে ধীরে ধীরে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। সমাজে ধূমপানকে অনেকে স্বাভাবিকভাবে দেখলেও এর রয়েছে নানারকম নেতিবাচক দিক। প্রথমত এটি থেকে শারীরিক ক্ষতি হয়। সেসব সিগারেটের প্যাকেটের গায়েও লেখা থাকে। অন্যদিকে এটি একটি আর্থিক ক্ষতি। ধূমপানের পেছনে যে টাকা প্রতি মাসে খরচ হয়, তা যদি সঞ্চয় করা হয়, তবে মাস শেষে বেশ ভালো একটা অর্থ সঞ্চয় হয়ে যাবে। মাদকাসক্ত একবার হয়ে গেলে তা থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন হয়ে যায়। মাদকাসক্ত ব্যক্তির ক্যারিয়ার, জীবনযাপন সব ধ্বংস হয়ে যায়। ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যায়।
ভালো ক্যারিয়ার গঠনের জন্য অনেকে সহশিক্ষা কার্যক্রম, যেমন বিতর্ক, নাচ, গান, খেলাধুলা, ক্লাবিং প্রভৃতি করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এগুলো আসলেই ভালো ক্যারিয়ার গঠনের জন্য সহায়ক হয়। তবে এগুলোরও একটা মাত্রা আছে। অতিরিক্ত হয়ে গেলে আসল কাজ তথা পড়াশোনায় ভাটা পড়ে যায়। রেজাল্টে ধস নামে। ফলে ক্যারিয়ারেও পিছিয়ে পড়তে হয়। তবে সহশিক্ষা কার্যক্রমে কেউ যদি খুব ভালো করেন, তবে তার ক্যারিয়ার সেদিকেও গড়ে উঠতে পারে। একটা পর্যায়ে প্যাশনটা পেশা হয়ে যেতে পারে। যেমন বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি পড়াশোনায় অতটা ভালো না হলেও খেলাধুলায় ভালো ছিলেন। আজকে তিনি সফল। তবে এ রকম ব্যতিক্রম হওয়ার সংখ্যাটা কম। এজন্য বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
শুধু বই নিয়েই পড়ে থাকা:
বর্তমান সময় হলো প্রতিযোগিতার। এ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে শুধু বইয়ের পড়াশোনা দিয়েই চলবে না। এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা অর্জন করতে হবে। অনেকে না জেনে শুধু বই নিয়ে পড়ে থাকেন। বইয়ের জ্ঞান শুধু ভালো রেজাল্ট করতে সহায়তা করে। তবে ক্যারিয়ারে ভালো করতে হলে ভালো রেজাল্টের পাশাপাশি কিছু দক্ষতা আপনার থাকতেই হবে। যেমন যোগাযোগ দক্ষতা, কম্পিউটার দক্ষতাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা। ভালো রেজাল্টের গুরুত্ব ক্যারিয়ারে ভালো করতে অবশ্যই প্রয়োজনীয়। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, কর্মজীবনে সবাই দেখতে চায় কাজ। আপনি কত ভালো কাজ পারেন, এটা মুখ্য হয়। এখানে রেজাল্ট কেউ দেখতে চায় না। ক্যারিয়ারে পিছিয়ে যাওয়ার কারণ সমূহ
আমি অনেক শিক্ষার্থীকে পিছিয়ে যেতে দেখেছি শুধু সঙ্গী বা বন্ধুবান্ধব নির্বাচনে ভুল করার কারণে। একজন ভালো বন্ধু আপনাকে উন্নত জীবন গড়তে সহায়তা করতে পারে। অন্যদিকে একজন খারাপ বন্ধু আপনার জীবনটা ধ্বংস করে দিতে পারেন। তাই অবশ্যই বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক হতে হবে। ভালো সঙ্গী বা বন্ধু হলো সেই বন্ধু, যে আপনাকে সুন্দর জীবন গঠন, উন্নত ক্যারিয়ার গড়তে আপনাকে উৎসাহিত করবে। আপনার প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে। তার আলাপ-আলোচনার একটা অংশ নিয়ে জুড়ে থাকবে ক্যারিয়ার ও ইতিবাচক জীবন। একজন ভালো বন্ধু বা সঙ্গী পাওয়া সত্যি ভাগ্যের বিষয়।