দিল্লী সালতানাত

দিল্লী সালতানাত

দাস বংশ (১২০৬-১২৯০) 
সুলতান কুতুবুদ্দিন আইবেক (১২০৬-১২১০)
ভারতে তুর্কি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা হলেন কুতুবুদ্দিন আইবেক। তিনি ছিলেন গজনীর সুলতান মুহম্মদ ঘুরীর ক্রীতদাস। মুহম্মদ ঘুরী তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে পৃথ্বীরাজকে পরাজিত করে কুতুবুদ্দিন আইবেককে অধিকৃত ভারতবর্ষের শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। ১২০৬ সালে মুহম্মদ ঘুরী মৃত্যুবরণ করলে কুতুবুদ্দিন ভারতবর্ষের সম্রাট হন। ঐতিহাসিক ড. শ্রীবাস্তবের মতে, তিনি ছিলেন সমগ্র হিন্দুস্তানের প্রথম মুসলিম সম্রাট।
১২১০ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। দানশীলতার জন্য তাকে ‘লাখবক্স’ বলা হত। দিল্লীর কুতুব মিনার নামক সুউচ্চ মিনারটির নির্মাণকাজ শুরু হয় তার শাসনামলে। তিনি মিনারটির নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেননি। দিল্লীর বিখ্যাত সাধক কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকীর নামানুসারে এর নাম রাখা হয় কুতুবমিনার।

 সুলতান কুতুবুদ্দিন আইবেক এর জীবন শুরু করেন- মুহাম্মদ ঘুরীর
ক্রীতদাস হিসেবে।
 মুহাম্মদ ঘুরীর অনুমতিক্রমে ভারত বিজয় করে দিল্লিতে মুসলিম শাসনের গোড়াপত্তন করেন- সুলতান কুতুবুদ্দিন আইবেক।
 উপমহাদেশে স্থায়ী মুসলিম শাসনের প্রতিষ্ঠাতা- কুতুবুদ্দিন আইবেক।
 কুতুবুদ্দিন আইবেক ছিলেন- তুকির্ স্তানের অধিবাসী।
 কুতুবুদ্দিন আইবেক এর শাসনামলকে চিহ্নিত করা হয়- প্রাথমিক যুগের তুকির্  শাসন হিসেবে।
 দিল্লির প্রথম স্বাধীন সুলতান- কুতুবুদ্দিন আইবেক।
 দানশীলতার জন্য সুলতান কুতুবুদ্দিন আইবেককে বলা হত- ‘লাখবক্স’।
 দিল্লির কুতুবমিনারের নির্মাণ কাজ শুরু করেন- কুতুবুদ্দিন আইবেক।
 সুলতান কুতুবুদ্দিন আইবেকের মৃত্যু হয়- ১২১০ সালে।

সুলতান শামসুদ্দিন ইলতুৎমিশ (১২১১-১২৩৬)
কুতুবউদ্দিন আইবেকের জামাতা ইলতুৎমিশ ১২১১ সালে দিল্লীর সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি দিল্লী সালতানাতের প্রক ৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। কুতুব মিনার নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করতে প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেন।

 কুতুবুদ্দিন আইবেকের জামাতা ছিলেন- শামসুদ্দিন ইলতুৎমিশ।
 প্রাথমিক যুগে তুকির্  স ুলতানদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ছিলেন- ইলতুৎমিশ।
 দিল্লির সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়- শামসুদ্দিন ইলতুৎমিশকে।
 ভারতে মুসলমান শাসকদের মধ্যে প্রথম মুদ্রা প্রচলন করেন- সুলতান শামসুদ্দিন ইলতুৎমিশ।
 ইলতুৎমিশের উপাধি ছিল- সুলতান-ই আযম।
 কুতুব মিনারের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করেন- সুলতান শামসুদ্দিন ইলতুৎমিশ। 

সুলতানা রাজিয়া (১২৩৬-১২৪০)
সুলতানা রাজিয়া ছিলেন ইলতুৎমিশের কন্যা। তিনি ছিলেন দিল্লীর সিংহাসনে আরোহণকারী প্রথম মুসলিম নারী।
 ইলতুৎমিশের কন্যার নাম- সুলতানা রাজিয়া।
 সুলতানা রাজিয়া দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন- ১২৩৬ খ্রিস্টাব্দে।
 দিল্লির সিংহাসনে আরোহণকারী প্রথম মুসলমান নারী- সুলতানা রাজিয়া।

সুলতান নাসির উদ্দিন মাহমুদ (১২৪৬-১২৬৬)
বাংলার প্রথম তুকির্  শাসনকর্তা ছিলেন ইলতুৎমিশের পুত্র সুলতান নাসির উদ্দিন মাহমুদ। সরল ও অনাড়ম্বর জীবনযাপনের জন্য ফকির বাদশাহ নামে তিনি পরিচিত ছিলেন। তিনি  ‍কুরআন অনুলিপন ও টুপি সেলাই করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

সুলতান গিয়াসউদ্দিন বলবন (১২৬৬-১২৮৭)
ভারতের তোতা পাখি নামে পরিচিত আমীর খসরু তাঁর দরবার অলংকৃত করেন। রক্তপাত ও কঠোর নীতি তাঁর শাসনের বৈশিষ্ট্য ছিল।

খলজী বংশ (১২৯০-১৩২০) -
▪ আলাউদ্দিন খলজীকে দিল্লির শ্রেষ্ঠ সুলতান বলে অভিহিত করেনপর্যটক ইবনে বতুতা।
▪ দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণের উপর হস্তক্ষেপ করেন- আলাউদ্দিন খলজী।
▪ বিখ্যাত আলাই দরওয়াজা- আলাউদ্দিন খলজীর কীর্তি।
▪ যে সকল গুণীজনকে আলাউদ্দিন পৃষ্ঠপোষকতা করেন- ঐতিহাসিক জিয়াউদ্দিন বারনী, কবি হোসেন দেহলবী, কবি আমির খসরু প্রমূখ।
▪ প্রথম মুসলমান শাসক হিসেবে দক্ষিণ ভারত জয় করেন- আলাউদ্দিন খলজী।
▪ দক্ষিণাত্যের দেবগিরির রাজা রামচন্দ্রের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনা করা হয়- মালিক কাফুর নেতৃত্বে (১৩০৬ খ্রিস্টাব্দে)।

তুঘলক বংশ (১৩২০-১৪১৩) 
মুহম্মদ বিন তুঘলক (১৩২৫-১৩৫১)
তিনি ১৩২৬ সালে রাজধানীর দিল্লি থেকে দেবগিরিতে স্থানান্তরিত করেন। তাঁর রাজত্বকালে ১৩৩৩ সালে ইবনে বতুতা ভারতবর্ষে আগমন করেন এবং সুলতানের কাজীর পদ গ্রহণ করেন।
▪ দিল্লি থেকে দেবগিরিতে রাজধানী স্থানান্তর করেন (১৩২৬-২৭ খ্রিস্টাব্দে)- মুহম্মদ বিন তুঘলক।
▪ উত্তর ভারতে মোঙ্গলদের আক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় পুনরায় রাজধানী দিল্লিতে ফেরত আনেন- মুহম্মদ বিন তুঘলক।
▪ মুহম্মদ বিন তুঘলকের রাজত্বকালে ভারতবর্ষে আগমন করেন- ইবনে বতুতা।
▪ সোনা ও রূপার মুদ্রার পরিবর্তে প্রতীক তামার মুদ্রা প্রচলন করে মুদ্রামান নির্ধারণ করে দেন- মুহম্মদ বিন তুঘলক।
▪ ইবনে বতুতাকে প্রথমে দিল্লির কাজী এবং পরবর্তীতে চীনের রাষ্ট্রদূত করেন- মুহম্মদ বিন তুঘলক।

মাহমুদ শাহ
তুঘলক বংশের শেষ সুলতান ছিলেন মাহমুদ শাহ। বিখ্যাত তুর্কি বীর তৈমুর ছিলেন এসময় মধ্য এশিয়ার সমরখন্দের অধিপতি। শৈশবে তার একটি পা খোড়া হয়ে যায় বলে তিনি তৈমুর লঙ নামে অভিহিত।
▪ তুঘলক বংশের শেষ সুলতান ছিলেন- মাহমুদ শাহ।
▪ তৈমুর লঙ-এর ভারত আক্রমণে পরাজিত হন- মাহমুদ শাহ।
▪ বিখ্যাত তুর্কি বীর তৈমুর ছিলেন- মধ্য এশিয়ার সমরখন্দের অধিপতি।
▪ তৈমুর লঙ ভারত আক্রমণ করেন- ১৩৯৮ সালে।

ইব্রাহীম লোদী
১৫২৬ সালে পানিপথের প্রথম যুদ্ধে বাবরের নিকট দিল্লীর লোদী বংশের সর্বশেষ সুলতান ইব্রাহীম লোদীর পরাজয়ের মাধ্যমে দিল্লী সালতানাতের পতন ঘটে।
 দিল্লীর লোদী বংশের সর্বশেষ সুলতান- ইব্রাহীম লোদী।
 দিল্লীর সালতানাতের পতন ঘটে- ইব্রাহীম লোদীর পরাজয়ের মাধ্যমে।